Halloween Costume ideas 2015
April 2025


সোনারগাঁও দর্পণ :

সোনারগাঁওয়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পরিবহনের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নয়ন (৩৫) নামে এক শ্রমিকের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়েছে। নিহত নয়নের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা এলাকায়। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের রতনদি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কনকা ফ্যাক্টরির সামনে ইউটার্ণ নেওয়ার সময় অটোরিক্সা-মিক্চার মেশিন গাড়ি ও পিকআপ ভ্যানের সাথে ত্রিমুখী সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

দুর্ঘটনায় আহত আজিজুল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ, ফজলুল হক, আকবর আলী, সজিব হোসেন, লুকেট, হৃদয়,আমিনুল, রুবেল মিয়া ও তানভীর মিয়াকে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ জানায়, মহাসড়কের উল্টোপথে দ্রæত গতিতে একটি মিনি কাভার্ডভ্যান এসে মহাসড়ক পারাপারের সময় একটি অটোরিক্সা এবং ভবন তৈরিতে ব্যবহৃত মিক্চার মেশিন গাড়ির সাথে ত্রিমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশ আসার আগেই কাভার্ডভ্যানটি পালিয়ে যায়। তাই পিকআপ ভ্যানটি আটক বা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন তিথি জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মোট ১১ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এরমধ্যে একজন হাসপাতালে আসার আগেই মারা যায়। বাকি ১০ জনের মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 



সোনারগাঁও দর্পণ : 

হাত-পা বাঁধা ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত এক সনাতন (হিন্দু) নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের জিয়ানগর এলাকায় মেনীখালী নদ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় মরদেহটি মাছ ধরার খরার একটি বাঁশের খুটির সাথে বাঁধা ছিল। 

বৈদ্যেরবাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, জিয়ানগর এলাকায় মেনীখালী নদীতে একজন নারীর ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত-পা বাঁধাবস্থায় মাছ ধরার বাঁশের একটি খুটির সাথে বাঁধা অবস্থা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা নারীটিকে হত্যা করে এখানে এসে রেখে যায়। 

মরদেহটির পরিচয় শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।



সোনারগাঁও দর্পণ : 

একের পর এক ধর্ষণ করেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে সিরিয়াল ধর্ষক নজরুল ইসলাম (৪৩)। ধর্ষণ করাই যেন তার নেশা। এ পর্যন্ত স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন বয়সের মোট ৮ জন নারীকে ধর্ষণ করেছে এই লম্পট। যাকেই নজরে এসেছে, ছলে-বলে-কৌশলে তার সাথেই দৈহিক সম্পর্ক করেছে এ লম্পট। 

গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ৮টি ধর্ষণের তথ্য থাকলেও হয়তো লোক  লজ্জা আর সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনেক পরিবার গোঁপনে ঢুকড়ে কাঁদছে, যার খবর সংবাদকর্মীদের কানে এখনো পৌঁছায়নি। এ বিষয়ে সোনারগাঁও থানায় একাধিক অভিযোগ হলেও পুলিশ নিশ্চুপ বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সম্প্রতি স্থানীয় এলাকার মাত্র ১৩ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করলে ফুঁসে উঠে স্থানীয়রা। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের দিঘি চাঁনপুর গ্রামের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী এবং বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ম্যানেজ করে পরিবারের ছত্র-ছায়ায় দিনের পর দিন এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। 

সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্ষণের শিকার একাধিক পরিবারের সদস্যরা জানায়, নজরুলের এ অপকর্মের কথা তার পরিবারের সবার জানা। সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পান ছোট বোন শামীমার কাছ থেকে। 

এমন তথ্যের পর কথা হলে নজরুলের বোন শামীমা নজরুলের অপকর্মের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু সে সকল ঘটনাগুলোকে ধর্ষণ বলতে নারাজ তিনি। 

তার মতে, একজন মেয়েকে একজন পুরুষ একা কখনোই ধর্ষণ করতে পারেনা। উভয়পক্ষের সম্মতিতেই যা হবার তা হয়েছে। আবার কোন ঘটনার বিপরীতে রয়েছে অর্থের সম্পর্ক রয়েছে বলেও তার দাবি। তবে ‘যা রটে কিছুনা কিছু ঘটে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

১৩ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পিছনে অর্থ না সম্মতি কোন কারণ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে শামীমার দাবি, এ ঘটনাটি একটা ভুল-বুঝাবুঝি মাত্র। কি ধরণের ভুল বুঝাবুঝি জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেননি। অকপটে স্বীকার করেছেন ভবিষ্যতে এমন ভুল আর করবেন না। শুধরে নিবেন তার ভাইকে।

এদিকে, নজরুলের একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে সেগুলোর দায়িত্ব পেতেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। বর্তমানে পান বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তারা বিচার শালিসির নামে প্রশ্রয় দিয়ে একের পর ধর্ষণ করতে সুযোগ দিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পরিবারের দাবি। ভুক্তভোগীদের মতে, পরিস্থিতি এমন করা হয়েছে যে, নেতারা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা মেনে নিতে তারা সে সময় বাধ্য হয়েছেন। এখনো হচ্ছেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ধর্ষণের বিচার শালিস করেছেন আওয়ামী লীগের এমন নেতাকর্মীরা এলাকায় না থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে গণমাধ্যম কর্মীরা আইয়ুব আলী নামে এক বয়োজ্যেষ্ঠ’র মুখোমুখি হোন। তিনি সম্পর্কে এক নির্যাতিতার মায়ের চাচা। আইয়ুব আলী জানান, তিনি কোন বিচার করেননি। তবে, ঘটনার পর ধর্ষক নজরুলের চার বোন এবং ধর্ষিতার চার বোন মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে সে সিদ্ধান্তটা শুধু আইয়ুব আলীকে তার বাড়িতে গিয়ে জানান।

ধর্ষণের বিচার শালিস করায় অপর অভিযুক্ত উপজেলা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন বলেন, সামাজিক বিচার শালিসে ধর্ষণের বিচার করার কোন বৈধতা নাই। যদি কেউ করে থাকে আমি জানিনা। তবে, নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষে কেউ আমার কাছে আইনি সহযোগিতার জন্য আসলে আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। 

এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার ওসি মফিজুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ দিয়েছেন। মামলাও হয়েছে। অভিযুক্ত নজরুলকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।  




সোনারগাঁও দর্পণ :

মাথায় টুপি, গাল ভর্তি লম্বা দাড়ি, কপালে নামাজ পরার দাগও আছে। রক্তাক্ত ষাটোর্ধ বাবার অচেতন দেহে বড় ভাই জহিরুল ইসলামের লাথির পর লাথি দেওয়ার মর্মান্তিক দৃশ্য মন ভরে দেখছে ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম। তার পাশেই দাড়িয়ে বোন হালিমা খাতুন।

জমি লিখে না দেওয়ায় এভাবেই নিজ পিতা আষাঢ়িয়ার চর এলাকার আব্দুর রহিম (৭০) কে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টা করেছে তার ঔরষজাত সন্তানেরা। নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় নির্যাতনকারী সন্তানদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি উঠে। 

অপরদিকে, মুল ঘটনা জানার পর এ ঘটনায় দ্বিতীয় স্ত্রী’কে দোষছেন অনেকে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ার চর গ্রামে আব্দুর রহিমের নিজ বাড়ির সামনে। 

স্থানীয়রা জানায়, আব্দুর রহিমের মোট চার সন্তান। এদের মধ্যে দুই ছেলে সাইফুল ও জহির এবং মেয়ে রওশনারা এবং হালিমা। রহিমের প্রথম স্ত্রী বছরখানেক আগে মারা যায়। রহিম দ্বিতীয় বিয়ের ইচ্ছাপোষন করলে সন্তানদের জমি লিখে দেওয়ার শর্তে মাস তিন আগে রহিমকে বিয়ে করায়। বিয়ের পর সন্তনদের ১৩ শতাংশ জমি লিখেও দেয় রহিম। বিষয়টি পরে দ্বিতীয় স্ত্রী জানতে পারে। পরবর্তীতে পূণরায় আরও জমি লিখে নিতে ছেলে-মেয়েরা রহিমকে চাঁপ দিলে দ্বিতীয় স্ত্রী বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী’কে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় রহিমের সন্তানরা। নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে বাবার বাড়ি চলে যায় রহিমের দ্বিতীয় স্ত্রী। রহিম স্ত্রী’কে ফিরিয়ে আনতে চাইলে রহিমকে তার স্ত্রী সাফ জানিয়ে দেয়, তার সকল সম্পত্তি বিক্রি করে তার (দ্বিতীয় স্ত্রী) বাবার বাড়িতে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করতে পারলেই কেবল রহিমের ঘর করবে তার স্ত্রী। এরপর জমি বিক্রির চেষ্টা করছে রহিম, জানতে পেরে সন্তানরা রহিমকে চাঁপ দেয় তাদের নামে জমি  লিখে দিতে। রহিম এতে রাজি না হওয়ায় রহিমের ওপর প্রায়ই পাশবিক নির্যাতন করতো সন্তানরা। সবশেষ রবিবার দুপুরে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে জমি লিখে দিতে আবারও চাঁপ দিলে অস্বীকৃতি জানালে প্রকাশ্য দিবালোকে রহিমকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্রের আঁঘাতে হত্যার চেষ্টা করে সন্তানরা। 

এ ঘটনা স্থানীয় আব্দুল জলিল নামে এক যুবক তার মোবাইল থেকে ফেসবুক লাইভ করলে তা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয় এবং নির্যাতনের সাথে জড়িত সন্তানদের আইনের আওতায় আনার দাবি উঠে। 

সন্তানদের নির্যাতনে রক্তাক্ত আহত আব্দুর রহিম বর্তমানে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

যেহেতু ঘটনাটি একান্তই পারিবারিক এবং থানায় ভুক্তভোগীর পক্ষে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি তাই লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় সোনারগাঁও থানা পুলিশ। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

করোনাকালীণ সময় নিজের জীবন বাজী রেখে অন্যের জীবন বাঁচানোর আপোষহীন যোদ্ধা ‘সানাউল্লাহ বেপারী’কে গ্রেফতার করেছে সোনারগাঁও থানা পুলিশ। দিনভর চাউর ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

আদতে কি তা-ই ? আসলেই করোনা যোদ্ধা সানাউল্লাহকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ? 

যদি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন মামলায় সানাউল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে, তাহলে সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার এসএম সাজ্জাত আলী এনডিসি ওই আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে যে সকল মামলা হয়েছে, সে সকল মামলায় কোন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হলে তা অবশ্যই তদন্ত করে প্রমাণিত হওয়ার পর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলাপের পর গ্রেফতারের একটা নির্দেশনা দেন। 

সানাউল্লাহ বেপারীকে গ্রেফতারে কি সে নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম খান জানান, ডিএমপি কমিশনারের ওই আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। সম্ভবত আপনার কাছে তার আপডেট নেই। আর এ ব্যাপারে বক্তব্য চাইলে ওসি সাহেবের সাথে কথা বলতে হবে।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মফিজুর ইসলাম বলেন, সানাউল্লাহ বেপারীকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন মামলায় গ্রেফতার করা হয়নি। থানায় এলাকায় একটা ঝামেলা হয়েছে, সেই ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কি ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সুর্দিষ্টভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাহ, তা বলা যাবেনা। 

এরআগে, মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) বিকেলে সোনারগাঁও উপজেলা ঈদগাহ মাঠ থেকে পুলিশ বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের মামরকপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে ও করোনা যোদ্ধা সানাউল্লাহকে গ্রেফতার করে। 



সোনারগাঁও দর্পণ : 

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের অবৈধ আকাশমনি রদ্দা কাঁঠ উদ্ধার করেছে সোনারগাঁও বনবিভাগ। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আষাঢ়িয়ার চর এলাকা থেকে কাঁঠগুলো উদ্ধার করা হয়।

এ সময় কাঁঠ পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মিনি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ড ১৪-৭১৩৫) জব্দ করে বন বিভাগের তত্ত¡াবধানে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোর আনুমানকি ৬ টার দিকে সোনারগাঁও থেকে কুমিল্লার দিকে একটি মিনি ট্রাকে করে ২০০ ঘন ফুট কাঁঠ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়ার সময় বনবিভাগের নিয়মিত চেকপোষ্ট পরিচালনাকালীণ কর্মকর্তাদের সন্দেহ হলে গাড়িটি থামার সংকেত দেন। গাড়িটি থামলে তল্লাশী করে গাড়িতে আকাশমনি রদ্দা কাঁঠ দেখতে পান এবং কাগজ দেখতে চান। 

কাঁঠের বৈধতার পক্ষে কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হলে কর্মকর্তারা গাড়ির কাগজ দেখতে চাইলে গাড়ির চালক ও হেলপার দৌড়ে পালিয়ে যায়। 

সোনারগাঁও বন বিভাগের স্টেশন কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, সহকর্মীদের নিয়ে নিয়মিত টহলকালীন সময় সন্দেহ হলে গাড়িটি সার্চ করা হয় এবং কাঁঠ ও গাড়ির বৈধ কাগজপত্র না থাকায় গাড়িসহ অবৈধ কাঠগুলো জব্দ করা হয়। এ ব্যাপরে বন মামলা প্রক্রিয়াধীন।



সোনারগাঁও দর্পণ :  

সোনারগাঁওয়ে এক ঝটিকা মিছিল করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে কাঁচপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে তারা এ ঝটিকা মিছিল করে। 

অপরদিকে, ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিবাদ মিছিল করেছে উপজেলা যুবদল। সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তারা এ প্রতিবাদ মিছিল করে। 

সূত্র জানায়, গত ২০২৪ এর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর এই প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে রাজপথে প্রকাশ্য দিবালোকে ঝটিকা মিছিল করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নয়ামাটি এলাকায় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাঁসবে, শেখ হাসিনা বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’ এমন বিভিন্ন শ্লোগান সংবলিত একটি মিছিলের ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।’ 

একটি বিশ^স্ত সূত্র দাবি করে, সাদীপুর ইউনিয়নের নয়াপুর এলাকার আশিক রহমান সরকার নামে এক ছাত্রলীগ নেতা এ ঝটিকা মিছিলের নেতৃত্ব দেন। সাথে নয়াপুর, নয়ামাটি, বেহাকৈর, গনকবাড়ি,সাদীপুর এলাকার ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী ওই মিছিলে অংশ নেয়। 

এদিকে, প্রকাশ্য দিবালোকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হলে নড়ে-চড়ে বসে উপজেলা বিএনপি ও পুলিশ প্রশাসন। 

মহাসড়কে ছাত্রলীগের মিছিলের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিৎ প্রতিবাদ মিছিল করেছে উপজেলা বিএনপি ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ফজল হোসেন ও উপজেলা যুবদল নেতা আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নামে শতাধিক নেতাকর্মী কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ প্রতিবাদ মিছিল করে। 

মিছিলে তারা ‘জিয়ার সৈনিক, এক হও এক হও’, হৈ হৈ রৈ রৈ, ছাত্রলীগ গেলি কই’, আওয়ামী লীগের গুন্ডারা, হুশিয়ার সাবধান’সহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায়। 

অপরদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছাত্রলীগের ঝটিকা অভিযানে হঠাৎই যেন তৎপর হয়ে ওঠেছে সোনারগাঁও থানা পুলিশ। দুপুরে সোনারগাঁও থানার এসআই সামিরুলের নেতৃত্বে কাঁচপুর এলাকা থেকে রাজিব হাসান নামে এক যুবলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সোনারগাঁও থানা পুলিশ গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করে। 



সোনারগাঁও দর্পণ : 

সোনারগাঁওয়ে চাঁদা নেওয়ার সময় কুখ্যাত ডাকাত সর্দার পিয়েলসহ তিন ডাকাতকে হাতে নাতে গ্রেফতার করেছে সোনারগাঁও থানা পুলিশ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার কিছু আগে ৬টার দিকে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর আজাম বাড়ি চিড়ারমিল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতারকৃতরা হলো হাবিবপুর গ্রামের টিপু সুলতানের ছেলে পিয়েল (৩০) ও তার ছোট ভাই ইয়াসির আরাফাত (২০) এবং পৌরসভার দৌলের বাগ এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে শাওন হোসেন (২৫)।

একটি বিশ^স্ত সূত্র জানায়, কুখ্যাত পরিবহন ডাকাত সর্দার, চাঁদা বাজ ও মাদক ব্যবসায়ী পিয়েল বেশ কিছু দিন ধরেই স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ এপ্রিল সোমবার ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দাবিকৃত চাঁদা নেওয়ার সময় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সোনারগাঁও থানা পুলিশের একটি দল হাতে নাতে তাদের গ্রেফতার করে। 

সূত্রটি আরও জানায়, গ্রেফতারের সময় ডাকাত পিয়েল একতলা একটি ভবনের ছাঁদ থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে আহত হয়। পরে সোনারগাঁও থানা পুলিশ তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানা হেফাজতে নেন। 

এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান বলেন, ঘটনা সঠিক। এ ব্যাপারে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা, সংরক্ষণ ও তার বিকাশে যে কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধ পরিকর বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ইলিয়া সুমনা। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত পক্ষকাল ব্যাপী বৈশাখী উৎসব-২০২৫ এবং প্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছর পূর্তিতে স্বুর্ণজয়ন্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এরআগে, অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে দেশের প্রায় বিলুপ্ত, প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ও উদ্ধার করা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জন্য পৃথক তালিকা প্রণয়ন ও তা ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের উত্থাপিত এক প্রকল্প নিতে সরকারের দৃষ্টি নেয়ার আহ্বান করেন। 

পরে প্রধান অতিথি বলেন, দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ, উদ্ধার, বিপনন ও প্রায় বিলুপ্ত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তথা দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় সরকার যে কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রস্তুত। বাংলাদেশের সকল মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি উজ্জল অংশ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, আপনারা দেশের ভালোর জন্য ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যে কোন প্রকল্প নেন তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কসল কর্মকর্তারা বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত। 


পরে পক্ষকাল ব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করে মেলার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখেন এবং নিজ পরিবারের জন্য শীতল পাটিসহ বিভিন্ন দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পণ্য ক্রয় করেন।

এরআগে, বৈশাখী উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তি উপলক্ষে ফাউন্ডেশন চত্ত¡রকে সাঁজানো হয় বর্ণিল সাঁজে। 

সকাল থেকে বাসন্তি রঙে নানা পোশাকে নানা বয়সের পর্যটকরা প্রিয়জনদের সাথে মেলায় ঘুরতে আসেন। বৈশাখ উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খেলা প্রদর্শণ করে। 

এরআগে, সকাল ১০টার দিকে বৈশাখী উৎসব এবং লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ৫০ বছর পূর্তিতে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়। ফাউন্ডেশন চত্ত¡রের মুল ফটকে গ্রামীণ ও নানা রংয়ের সাজে সজ্জিত করা হয়েছে।  

পক্ষকাল ব্যাপী মেলায় দেশের সেরা কারুশিল্পীরা অংশ গ্রহণ করে তাদের নিজেদের হাতে তৈরি বিভিন্ন পসরা সাজিয়েছেন মেলায়। কেউ করেছেন হালখাতা। প্রধান অতিথি ইলিয়া সুমনা সেই হালখাতায় স্বাক্ষর করেছেন। স্বাক্ষর করেছেন ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাহবুবুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান। পরে তারা মিষ্টি মুখ করেন। 

মেলায় কারুশিল্পীদের হাতের তৈরি নকশি কাথা, জামদানি, শীতল পাটি, শতরঞ্জি, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, কাঁঠ খোদাই শিল্প, হাতপাখা,  কাঁঠ খোদাই শিল্প, শোলা বাঁশ-বেত শিল্প পণ্যসহ উপ-জাতীয়দের বিভিন্ন পণ্যও শোভা পাচ্ছে বৈশাখী মেলায়। এছাড়া, নাগরদোলা, বায়োস্কোপের পাশাপাশি গ্রামীণ খাবারতো রয়েছেই। 

পক্ষকাল ব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা চলবে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

৬ দিন আগে নিখোঁজ হয়েছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৬৫)। ছয় দিন পর শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও গ্রামের দক্ষিণ পাশে ফ্রেশ ব্রান্ড খ্যাত মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের বালুর মাঠের এক ঝোঁপ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজুল ইসলাম মানসিক প্রতিবন্ধি ছিলেন। গত ৬ এপ্রিল সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়িতে আর ফিরে আসেননি। এলাকা ও স্বজনসহ সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি পর তাকে না পাওয়ায় ৭ এপ্রিল সোনারগাঁও থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরী করে। 

এদিকে, শনিবার (১২ এপিল) সকালে স্থানীয় এলাকায় পচাঁ দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে লাশ শনাক্ত করে। 

এ ব্যাপরে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম খান বলেন, সিরাজুল ইসলামের মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ এতটাই নরম যে প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আশিকুর রহমান নামে এক যুবলীগ নেতা আত্মাহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

এরআগে, গত সোমবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দড়িগাঁও গ্রামে তার নিজ বাড়িতে পালিবারিক কলহের কারণে তিনি নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। আত্মাহুতি দেওয়া আশিকুর ওই গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে এবং ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। 

স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার (৭ এপ্রিল) শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দড়িগাঁও গ্রামের নিজ বাড়িতে আশিকুর রহমান পারিবারিক বিবাদে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। সে সময় উপস্থিত স্বজন ও আশপাশের লোকজন দ্রæত উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ভর্তি করে। 

সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মফিজুর রহমান জানান, ঘটনার পর আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। তবে, আশিকুর রহমান নামে এক যুবককে দগ্ধ অবস্থায় সোমবার ঘটনার পরপরই ঢাকায় জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে শুনেছি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তিনি মারা যান। যতদুর জানতে পেরেছি, স্ত্রীর সাথে ঝগড়া থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে, কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল কি-না তা তদন্ত না করে বলা যাচ্ছেনা।


 


সোনারগাঁও দর্পণ :

“অন্নপূর্ণা যার ঘরে, সে কাঁদে অন্নের তরে” অথবা “আগের বৌ তাড়াইলাম চাল চাবানের ডরে, পরেরটা দেহি এহন আস্তা চালই গিলে”। 

বাংলার বহুল প্রচলিত এই প্রবচন দুটি যেন নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁওয়ের “মোগরাপাড়া এইচ,জি,জি, এস (হরি, গৌর, গোবিন্দ, শ্যাম-সুন্দর) স্মৃতি বিদ্যায়তন”র বেলায় অনেকটাই কার্যকর।  

এক সময় স্থানীয়দের ধারণা ছিল স্কুলটি সরকারি করণ করা হলে স্থানীয় গরীব-দুস্থ্যরা কম খরচে তাদের সন্তানদের শিক্ষা দিতে পারবেন। অনেক সংগ্রাম চেষ্টার মাধ্যমে অবশেষে বিদ্যালয়টি সরকারিও হলো। কিন্তু সরকারি হওয়ার পর থেকে স্থানীয়রা কম খরচে সরকারিভাবে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করানো দুরের কথা, স্থানীয় সন্তানরা বিদ্যালয়টিতে ভর্তিরই সুযোগ না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।

তার উপর যারা ভর্তি হয়, তাদের সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়। এছাড়া স্কুলের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম আর দুর্নীতি যেন ছাঁয়া সঙ্গি।

সম্প্রতি আসন্ন এসএসসি ও ভোকেশনাল পরীক্ষার রুটিন প্রকাশের পর প্রকাশ্যে আসে স্কুলের কতিপয় দুর্নীতিবাজ শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ। দীর্ঘ দিন আগে থেকে এ অভিযোগের সাথে ভর্তি বাণিজ্যেরও একটি অভিযোগ ছিল। যা ভয়ে কেউ কখনোই প্রকাশ্যে আনেনি। তবে, বর্তমানে বিনা রশিদে কোচিংয়ের কথা বলে তিন হাজার দুইশত টাকা থেকে পাঁচ হাজারের অধিক অর্থ গ্রহণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, মোগরাপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কোচিং এর নামে ৩২শ থেকে ৫ হাজারের অধিক টাকা নিচ্ছে স্কুলটির সহকারি শিক্ষক হিমাংশু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুলতান মিয়া, সহকারি শিক্ষক নুর আলমসহ বেশ কয়েকজন খন্ডকালীণ শিক্ষক। 

যদি বেশ কিছু দিন আগে খন্ডকালীণ শিক্ষকদের খরচ বাবদ স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু টাকা সংগ্রহের কথা “ সোনারগাঁও দর্পণ”এর কাছে স্বীকার করেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের একজন শিক্ষক। তার দাবি, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা খুবই কম। ফলে, খন্ডকালীণ হিসেবে বেশ কয়েকজন শিক্ষক নেন। তারা যেহেতু সরকার থেকে কোন বেতন পান না তাদের খরচ লাঘবের জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর এ খড়গ দেওয়া হয়। 

অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোগরাপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মোট ৩৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিবে। তাদের কাছ থেকে মডেল টেস্ট ও কোচিং বাদব ৩২শ টাকা এবং মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশ না নিলে জড়িমানা বাবদ দুই হাজার টাকাসহ মোট পাঁচ হাজার টাকা দাবি করছে। যারা টাকা না দিচ্ছে সে সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেওয়া হবেনা বলে হুমকী দিচ্ছে। মোট পরীক্ষার্থী ৩৬০ জন হিসেবে ৩ হাজার ২শ টাকা করে মোট টাকার ১১ লাখ ৫২ হাজারের বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার টার্গেটে নামে স্কুলটির প্রধান শিক্ষকসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র।

এ ব্যাপারে অন্যতম অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক হিমাংশু এক প্রশ্নের জবাবে জানান, কোচিং করার সরকারি নিয়ম না থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে একটি মিটিংয়ে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হলে অভিভাবকদের সম্মতিতে কোচিং করা যাবে বলে জানান। পরে ৮০ ভাগ অভিভাবকের স্বাক্ষরে অনুমতির পর কোচিং করানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমি বেশি দিন হয়নি এখানে যোগদান করেছি। তবে যতদুর জানতে পেরেছি, একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে অভিভাবকদের সম্মতিতেই কোচিং এবং মডেল টেস্ট এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর টাকার জন্য কোন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেওয়া হচ্ছেনা এই অভিযোগটি সত্য নয়।

পদাধিকার বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান হিসেবে, নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আশরাফুল আলম আশরাফ প্রধান। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে তিনি প্রাথমিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। পিরোজপুর ইউনিয়নবাসীকে নির্বাচনী সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ইউনিয়নটির ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক এ মেম্বার ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আশরাফুল আলম আশরাফ প্রধান।

পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা শিল্পাঞ্চল এলাকার প্রতাবের চর গ্রামের ছমির উদ্দিন প্রধানের ছেলে ও বিএনপি নেতা আশরাফ প্রধান ছোট বেলা থেকেই মানুষের উপকার করতে ভালবাসতেন। ছোট বেলা থেকেই করতেন ব্যবসা। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের নিজ ওয়ার্ড ৯নং থেকে মেম্বার নির্বাচিত হয়ে সদস্য হয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের। 

পাঁচ বছরে তিনি তার আওতার মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে দাড়িয়েছেন। এলাকার স্বাস্থ্য উন্নয়নে করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিক ও মেঘনা স্কুলের পাশে গভীর নলকূপের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা, নয়াচরে ১টি, ইসলামপুরে ১টি ও ঝাউচর তিনটিসহ মোট ৭টি ঘাঁট নির্মাণ করেছেন। 

মানুষের সহজ ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগের জন্য কাদিরগঞ্জ শাহজালাল মেইলের পাশ দিয়ে ৪টা রাস্তা, ঝাউচর কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে আবুল খায়েরের বাড়ি পর্যন্ত দোতলা মসজিদ রাস্তা, মেইন রাস্তা থেকে আনোয়ার হোসেনের বাড়ি পর্যন্ত দোপাট রাস্তা, জামানের বাড়ি থেকে আছুরের হয়ে কবরস্থান পর্যন্ত রাস্তা, ঝাউচর ঈদগাঁহ থেকে কান্দারগাঁও যাওয়ার মেনিখালী নদ পর্যন্ত রাস্তা, শাহজালাল গেইট থেকে ঈদগাঁহ পর্যন্ত রাস্তা, শাহজালাল মেইল দেওয়ালের পাশ দিয়ে প্রধান বাড়ি লাকি ডগ পর্যন্ত রাস্তা, সাধু মৌলভীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা, মেঘনা স্কুল থেকে মাসুম চেয়ারম্যানের বাড়ি হয়ে শাহজালাল গেইট পর্যন্ত রাস্তা, মেইন সড়ক থেকে আনন্দ ডগ হয়ে ইসলামপুর আদর্শ গ্রাম যাওয়ার রাস্তা, গঙ্গানগর ও ঈদগাঁহ মাঝের রাস্তা, কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে নুরে কাবা মসজিদ ও স্কুল পর্যন্ত রাস্তা, সামসুর বাড়ি থেকে ঈদগাঁহ পর্যন্ত ঝাউচর হালট দিয়ে ১৪ ফিটের রাস্তা এবং মেঘনা প্রাইমারি স্কুল মাঠের বাউন্ডারী নির্মাণসহ ৫ বছরে প্রচুর উন্নয়ন কাজ করেছেন, যা এলাকাবাসীর মুখে মুখে।

পিরোজপুর ইউনিয়নের পরিচিত নাম আশরাফ প্রধান সোনারগাঁও দর্পণ’ এর মাধ্যমে পিরোজপুর ইউনিয়নবাসীকে নির্বাচনী সালাম জানিয়ে বলেন, মানুষকে সহযোগিতা করলে বিভিন্নভাবেই করা যায়। আমি যখন মেম্বার ছিলাম তখন সরকারি অনুদানের সাথে ব্যক্তিগত অর্থ খরচ করে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে সাধ্যমতো দাড়িয়েছি। সেখান থেকে সহযোগিতার জায়গাটা অনেক ছোট। 

পরিষদের চেয়ারম্যান হলে সহযোগিতার জায়গাটা আরও বেশি তৈরি হলে সাধারণ মানুষের সেবার জায়গাটাও প্রসারিত হবে। তাই জনগণের পাশে নিঃস্বার্থভাবে থাকতে চাই। এজন্য ইউনিয়নবাসীর দোয়া,সমর্থন আর ভোটের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সোনারগাঁওয়ে পৃথক দুটি স্থানে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল এলাকার কাঁচপুর ওবার ব্রীজের নিচে এবং সোনারগাঁও ওলামা ঐক্য পরিষদ মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় এ কর্মসূচী পালন করা হয়।

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ‘দ্য ওয়াল্ড স্টপস ফর গাজা’র কর্মসূচীর আওতায় এ কর্মসূচী পালিত হয়। 

কর্মসূচীতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ওলামায়ে কেরামরা বক্তব্যে বলেন, ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যে অমানবিক বর্বরতা চালিয়ে আসছে, সে বর্বরতার প্রতি তীব্র নিন্দা আর ধিক্কার জানান। বলেন, আজ সারা বিশে^র মুসলমানদের অনক্যৈর ফসল ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন। 

ইসরায়েল এতটাই বর্বরতা আর অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে যে জাতিসংঘের নিষেধ অমান্য করে তারা এ বর্বরতা চালিয়েছে। আর জাতিসংঘ শুধু মৌখিকভাবে ইসরায়েলের বর্বরতা থামানোর কথা বলে, দৃশ্যত কোন পদক্ষেপ না নিয়ে তাদের বাধা দেওয়া পক্ষান্তরে ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ারই সামিল। তাই যে জাতিসংঘের কথার কোন মূল্য অন্য রাষ্ট্র না দিয়ে নিজেদের দাদাগিরি দেখায়, সে মেরুদÐহীন জাতিসংঘ থাকা না থাকা একই কথা। 

তারা বলেন, ইসরায়েল যুগ যুগ ধরে সারা বিশে^র মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে আগ্রাসনী মনোভাব নিয়ে বিচরণ করছে তা আজ বিশ^ মানবতার দুশমন হিসেবে বিবেচিত। 

এ সময় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত সকলে সারাবিশে^র মুসলমানদের ইসরায়েলি সকল পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেন। 

বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক মুসলিম সম্প্রদায়ের নিষ্কৃয়তা ও পক্ষপাতিত্বের কারণে নিরিহ ফিলিস্তানকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। জনশুণ্য করেছে ফিলিস্তিনকে। 

প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির শুরা সদস্য অধ্যক্ষ ড. ইকবাল হোসাইন ভুইয়া, দলটির নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির মমিনুল হক সরকার, জেলা সেক্রেটারি জেনারেল মো. হাফিজুর রহমান, সোনারগাঁও উপজেলা উত্তরের আমির মাওলানা ইসহাক, সেক্রেটারি মো. ইব্রাহিম, সোনারগাঁও দক্ষিণের আমির মো. মাহবুব হোসেন প্রমুখ। 

 মোগরাপাড়া চৌরাস্তা জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন খাঁনসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ধর্মপ্রাণ হাজার হাজার মুসলমান। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

সোনারগাঁও সরকারি কলেজে আমির হোসেন (৪৮) নামে এক বিদ্যুৎ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মরিফ (৪৮) নামে আরেক বিদুৎ শ্রমিক আশঙ্কজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। 

সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সোনারগাঁও সরকারি কলেজে বৈদ্যুতিক কাজ করার সময়এ দূর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত আমির উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের বড় ছেলে। আর আহত শরীফ একই গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে। 

সোনারগাঁও সরকারি কলেজ সূত্রে জানাগেছে, আহত শরীফ সোনারগাঁও সরকারি কলেজের নির্ধারিত বিদ্যুৎ শ্রমিক। আর আমির সম্প্রতি সৌদি থেকে দেশে আসে এবং শরীফের সাথে সহকারি হিসেবে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের কাজ করতো। 

দুপুর ২টার দিকে  সোনারগাঁও সরকারি কলেজের বিজ্ঞান ভবনের সিড়ি কোটার নিচে একটি অন্ধকার কক্ষে কলেজের পানি উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত একটি পুরোনো মোটর সরিয়ে নতুন মোটর বসানোর কাজ করছিল শরীফ এবং আমির। 

কাজের স্থানটি অন্ধকার থাকায় শরীফ তার মোবাইলের ফ্লাশ লাইট দিয়ে আমিরকে কাজে সহযোগিতা করছিল। এ সময় পানির মোটরের নিচে বিদ্যুতের মুল সঞ্চালন লাইনের একটি তার পড়ে তা ছিন্দ্র হয়ে মোটরের বডিতে বিদ্যুৎ চলে আসে। ফলে আমির কাজ করার সময় মোটরটি ধরে অন্যত্র সারানোর সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।

এদিকে আমির বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গেলে আমিরকে বাঁচাতে গিয়ে শরীফের পিঠে বিদ্যুতের তার লেগে সেও জড়িয়ে পড়লে শরীফের পিঠের বড় একটি অংশ পুড়ে ছাঁই হয়ে যাওয়ার উপক্রম। তাদের চিৎকারে কলেজে উপস্থিত শিক্ষক, অন্য কর্মচারী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে শরীফকে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠিয়ে দেয়। 

এ ব্যাপারে সোনারগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম বলেন, যারা বিদ্যুতের কাজ করছিল তারা সবসময়ই এ প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুতের সকল কাজ করেন। কোথায় কি, কিভাবে আছে সেটা তারাই জানে। 

আমরা যেহেতু এ বিষয়ে অজ্ঞ তাই তাদের নিরাপত্তার বিষয়গুলো তারাই মেনটেইন করতো। তবে, বিষয়টি মর্মান্তিক। আমি নিহত ও আহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। আর আহতের চিকিৎসার বিষয়ে সবসময় সহযোগিতা ও খোঁজ রাখছি। 

নিহতের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরিবারের জন্য কোন সহযোগিতা করা যায় কি-না সে বিষয়টি দেখব।  



সোনারগাঁও দর্পণ :

যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রী তিন দিন পানিসহ কোন খাবার না দিয়ে খুটির সাথে বেঁধে নির্যাতনে অভিযুক্ত পাষন্ড স্বামী উজ্জলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। 

দমদমা গ্রামের শাহজাহানের নিজ বাড়ি থেকে তার ছেলে উজ্জলকে ঘটনার দিন স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। শনিবার পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এরআগে, নির্যাতিতা সাদিয়ার মা জুলেখা বৃহস্পতিবার সোনারগাঁও থানায় পালিত মেয়ে সাদিয়ার স্বামী উজ্জল ও উজ্জলের মা মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে। 

এরও দুই বছর আগে উজ্জল সাদিয়াকে বিয়ে করার পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করে আসছিল। সাদিয়ার পরিবার উজ্জলকে বিভিন্ন সময় দুই লাখ টাকাও দেয়। কিন্তু মাদকাসক্ত উজ্জলের টাকার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারো সাদিয়াকে মারধর শুরু করে। কিছু দিন আগে তাকে গলায় ফাঁস দিয়েও মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সবশেষ গত ঈদুল ফিতরের তিন দিন আগে থেকে সাদিয়াকে কোন খাবার এমন কি এক গøাস পানিও না দিয়ে খুঁটির সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে আসছিল উজ্জল। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে যায় এবং সাদিয়াকে উদ্ধার করে উজ্জলকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

‘দমদমা’ প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। ঐতিহ্যবাহী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ও প্রভাবশালী মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামটি মাদকমুক্ত গ্রাম তথা দমদমা সমাজকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করেছেন গ্রাম পাঞ্চায়েত কমিটি। 

“মাদককে না বলুন, মাদক ব্যবসায়ী যেখানে, প্রতিরোধ সেখানে” এই শ্লোগানে গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির নির্দেশে স্থানীয় যুবসমাজের উপস্থিতিতে শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকালে দমদমা বয়েজ ক্লাবে আয়োজিত মাদক বিরোধী আলোচনা সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সন্ধ্যার আগে আলোচনা সভা শেষ হওয়ার পর থেকে দমদমা সমাজ তথা বিশেষ খানা, সাউপাড়া, দমদমা, আমতলা (এ সকল গ্রামের বাসিন্দারাও দমদমা সমাজের অন্তর্ভূক্ত) গ্রামের কোন স্থায়ী বা অস্থায়ী (ভাড়াটিয়া) বাসিন্দারা যদি মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত থাকে তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাকে সমাজচ্যুত করার পাশাপাশি সমাজ থেকে বিদায় করে আইনের কাছে সোপর্দ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

দমদমা বয়েজ ক্লাবে সভাপতি নাহিদ মোল্লার সঞ্চালনায় দমদমা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি কবিরুজ্জামান মোল্লার সভাপতিত্বে দমদমা জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক পঞ্চায়েত কমিটির অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য মোস্তফা কামাল বাবুল বলেন, এক সময় দমদমা গ্রামের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদের অত্র ইউনিয়নের অন্যান্য গ্রামের মানুষ সম্মান ও শ্রদ্ধার চোখে দেখতো। 


সম্প্রতি এই গ্রামের কিছু যুবককে ব্যবহার করে অন্যান্য গ্রামের বখাটে লোকজন মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে ফেলে। ফলশ্রæতিতে আমাদের নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটি সুস্থ্য ও মাদকমুক্ত সমাজ জীবন উপহার দিতে দমদমার যুবসমাজ মাদক নির্মূলে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা বাস্তবায়নে যা যা করা দরকার দমদমা সমাজ তা-ই করবে। 

মাদক নির্মূল করতে গিয়ে যদি সমাজের কোন পঞ্চায়েতের লোকজন বাধা দেয়, মাদক ব্যবসায়ী ও গ্রহণকারীদের প্রকাশ্যে বা গোপনে সাহস যোগায়, সে যদি আমার নিজের ঘরের লোকও হয় তাকেও সমাজচ্যুত করে সমাজ থেকে বের করে দেওয়া হবে। এছাড়া, দমদমা সমাজের সকল বাড়ির মালিকদেরকে তাদের ভাড়াটিয়াদের মাদক ব্যবসা, গ্রহণ ও শিষ্টাচারহীন কোন কাজের সাথে জড়িত পাওয়া যায়, তাহালে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে সমাজের পক্ষ থেকে সেই ভাড়াটিয়াদেরকেও এলাকা থেকে বের করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। 

গোষ্ঠীগত দ্ব›দ্ব দমদমা গ্রামের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা যুবসমাজের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে গ্রাম প্রধান সৈয়দ হোসেন বলেন, যেখানে আমাদের সমাজের সম্মান জড়িত সেখানে গোষ্ঠীগত দ্ব›দ্ব গৌন বিষয়। এখন থেকে কোন গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে বিবেচনায় রেখে কোন বিচার বা কাজ হবেনা। বিচার হবে দোষ দেখে। আর মাদক যেহেতু যেকোন অপরাধের প্রথম শত্রæ, তাই আগে প্রথম শত্রæকে শেষ করতে কোন রকম ছাড় দেওয়া হবেনা। 

মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও দমদমা পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য জহিরুল ইসলাম যুব সমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা যুব সমাজের যে কোন ভালো কাজের সাথে ছিলাম আছি এবং থাকব। ভবিষ্যতে আমরা বেঁচে থাকতেই দেখে যেতে চাই, আমাদের যুব সমাজ যে কোন সামাজিক সমস্যা সমাধানে মুন্সিয়ানার পরিচয় দিচ্ছে। এখন থেকে সকল আচার-বিচার তারা করবে আমরা পিছন থেকে তাদের সহযোগিতা করব মাত্র। কিন্তু এটাকে ব্যবহার করে যেন কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবতি না হয়ে কোন অপরাধে না জড়ায় সে দিকে সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান।

মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আবুল কালাম প্রধান বলেন, মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে কে কার ভাই, কার বাবা, কার মামা-কার কি সেগুলো দেখার বা শোনার সময় এখন না। এখন সময় আমাদের গ্রামের, সমাজের পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা। এই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে স্বজন প্রীতি, আত্মীয়করণকে পায়ে ঠেঁলে যুব সমাজকে সাথে নিয়ে যে কোন সমস্যা সমাধানই মুল লক্ষ্য। 

পরে আলোচনা সভার বার্তা সমাজের সকলের কাছে পৌঁছে দিতে এবং সমাজের মুরুব্বীদের দিক-নির্দেশনায় দমদমা সমাজের পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে উপস্থিত সকল যুবক ওয়াদাবদ্ধ হয়।



সোনারগাঁও দর্পণ : 

গেল বছরের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে দেশের আইনশৃঙ্খলাও প্রায় ভেঙে যায়। সে সময় পুরো দেশে বেড়ে যায় ছিনতাই,ধর্ষণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ঘটনা। এমন অরাজক পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরা দিতে হোন ঐক্যবদ্ধ।

তারই ধারাবাহিকতায় “নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরা গড়ি, অপরাধ রোধ করি” শ্লোগানে মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং ও কিশোর গ্যাং তথা সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধে ঈদ পূণর্মিলন ও আলোচনা সভা করেছে অরাজনৈতিক সংগঠন “মোগরাপাড়া শান্তি, শৃঙ্খলা যুব ঐক্য সংঘ।” 

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বড় সাদীপুর গ্রামের দলাল বাগ লিচু বাগানে শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 


স্থানীয় আইকন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ শেখ জাহিদুল আলম রাহিমের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন বড় সাদীপুর ঈদগাঁহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমএ মহিন মিয়া।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় যুবক সমাজের বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান তরুণ বর্তমান সমাজের অবক্ষয়, অবক্ষয়ের কারণ, প্রতিকার এবং ইসলামের ধর্মীয় রীতি-নীতিতে কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় এ সকল বিষয় তুলে ধরে বিশদ আলোচনা করেন।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বড় সাদিপুর গ্রাম এর উদ্যোক্তা হলেও সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দমনে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যেন “মোগরাপাড়া শান্তি, শৃঙ্খলা যুব ঐক্য সংঘ” অনতিবিলম্বের একটি নীতিমালা করে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ৫৬টি গ্রামের গ্রামবাসীর সমন্বয়ে সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে সামাজিক অপরাধ দমনে সহায়তা করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন বড় সাদিপুর ঈদগাঁহ ও সাদীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটি। 

আলোচনা সভার পর বড় সাদীপুর, বিশেষখানা, লেবুছড়া, দলদার, মুকতিশপুর, ষোলপাড়াসহ ৯ গ্রামে আজ ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে কোন মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকাÐ, ইভটিজিংসহ সামাজিক অপরাধ মুলক কাজ বন্ধে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। এ সকল গ্রামে আজ থেকে কোন ধরনের মাদক গ্রহণ, বিক্রি ও আদান-প্রদান এবং সন্ত্রাসী, ছিনতাই কাজ করলে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদেরকে ধরে আইনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন। 



সোনারগাঁও দর্পণ :

এক সময়ের স্রোতন্বেসী মেঘনা তার আগের রূপ হারায়নি। এখনো মেঘনার প্রবল স্রোতে ভেসে যায় জীবন। নৌ-পরিবহন ডুবে গেলে কোন কোন সময় কোন কোনটার হদিস না পাওয়ার নজির আছে অনেক। কিন্তুসকল জান ও মালের উর্ধ্বে মানুষের জীবন। আর সেই অমূল্য সেই জীবন রক্ষায় নিজ উদ্যোগে সতর্কতামুলক উদ্যোগ নিয়েছে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার তেতৈতলা এলাকার কতিপয় যুবক। তারা ব্যানার টাঙিয়ে মেঘনা ব্রীজের পিলারে সেই ব্যানার লাগিয়ে দেন স্বউদ্যোগে।

জানাগেছে, প্রতি বছর অতি উৎসাহী কিছু মানুষের অসতর্কাতার কারণে গজারিয়া অংশে মেঘনা ব্রীজের অদূরে পানিতে ডুবে কোন না কোন মানুষের মৃত্যু হয়। যা অত্যন্ত মর্মান্তিক। সবশেষ গত ২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় এলাকার আতিক হোসেনের ছেলে ও নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ ফারুফ (২০) নিখোঁজ হয়। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে গজারিয়া থানার মেঘনা নদীর ভাটিবলাকী এলাকায় ফারুকের লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে নৌ পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার পর স্থানীয় যুবক ইমরান ভুইয়ার উদ্যোগে এবং স্থানীয় ইফাত আলম রিমন, রাফিজ ভুইয়া, আসিফ দেওয়ান, রোহান, নিরবের স্বেচ্ছাশ্রমে মেঘনা নদীর উপর নির্মিথ মেঘনা ব্রীজের পিলারে সতর্কতামুলক ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে লেখা রয়েছে, “বিপদজনক এরিয়া” মেঘনা নদীতে আজ (৪ এপ্রিল) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নদীতে নামা নিষেধ করা হইল। “জীবন অমূল্য, ঝুঁকি নয়-পানিতে না” ‘পানিতে নামা জীবননাশের কারণ হতে পারে।’

তেতৈতলা এলাকার পাথর ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ২ এপ্রিল ২২ জন যুবক গোসল করতে মেঘনা নদীতে নামে। সকলে উঠলেও ফারুক না উঠায় তাকেও উঠতে বলে সহপাঠিরা। ফারুক তাদের জানায় একটি মাত্র ডুব দিয়েই সে উঠে যাবে। কিন্তু ডুব দেওয়ার পর সে না ওঠায় অন্যরা তাকে খুঁজে পায়নি। হয়তো ওই ডুবই ছিল ছেলেটির শেষ ডুব।

পরে আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, প্রতিবছরই এইস্থানে কেউ না কেউ নিখোঁজ হয় এবং পরবর্তীতে মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, যেহেতু মেঘনায় প্রচুর স্রোত। আর ছেলেটি সাতার জানতনা। তাই স্রোতের তীব্রতায় ডুবে ভেঁসে গিয়ে মৃত্যু হয়। তাই যুব সমাজের এমন উদ্যোগকে স্বাগত ও সাধুবাদ জানান তিনি।



সোনারগাঁও দর্পণ :

৪ এপ্রিল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটা থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব মহাষ্টমী স্নান উৎসব। 

নারায়ণগঞ্জের বন্দর এবং সোনারগাঁও উপজেলার মধ্যবর্তীস্থান দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে লাঙ্গলবন্ধ এলাকায় এ স্নান বা ডুব উৎসব শুরু হবে। শেষ হবে ৫ এপ্রিল রাত ১২ টা ৪৫ মিনিটে। গত বার ১৯টি স্নান ঘাটে দেশ-বিদেমের লাখো ভক্ত স্নান উৎসবে তাদের পুণ্যকাজ করলেও এবার নজরকাড়া নজরদারির মধ্যে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ২০টিরও অধিক ঘাঁটে তারা স্নান করতে পারবেন। 

মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবার কড়ানিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন,যা অতীরের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন, লাঙ্গলবন্ধ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা ননী গোপাল সাহা। 

তিনি জানান, জেলা প্রশাসক স্নান উৎসবকে ঘিরে স্নানের তিন কিলোমিটার এলাকা নিজে পায়ে হেটে তিনবার পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসকের সহায়তায় এবার চার জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালন করবেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পাশ^বর্তী দেশ ভারতের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এবারের স্নান উৎসবে যে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আঁকাশে ড্রোন উড়বে। যা স্নান উৎসবে প্রথমবারের মতো উদ্যোগ।

এছাড়া, পুণ্যার্থীদের সবিধার্থে টাঙানো হয়েছে রোড ম্যাপ। বিদেশী পুণ্যার্থীদের বিষয়টি মাথায় রেখে পৃথক বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তার বিষয়টি আরও কঠোরভাবে দেখা হচ্ছে। স্নান উৎসবের বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। 

একজন মেজরের নেতৃত্বে বাংরাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ জন সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া, নিরাপত্তা সদস্য থাকবেন এক হাজার ৪৪২ জন পুলিশ, ৪৭১ জন আনসার, ৬৪ জন নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং হাইওয়ে পুলিশের একাধিক টিম দায়িত্ব পালন করবেন। 

র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাতো থাকছেনই। নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে সাতটি ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়াও সাদাপোশাকে থাকছেন বিশেষ টিম। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় থাকছে ৭টি মেডিকেল ক্যাম্প, ১০টি এ্যাম্বুলেন্স।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রতি ঘন্টায় সবশেষ আপডেট জানবেন। যা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রতিটি সদস্যকে নিজ দায়িত্ব পালনে অনেক বেশি উজ্জীবিত করবে। 

এদিকে, স্নান উৎসব উদযাপন কমিটি থেকে জানাগেছে, ইতোমধ্যে উৎসব পালনের সকল উপকরণসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। ফুল, ধান, বেলপাতা, দুর্বা, হরতকি, ডাব, আম্রপল্লব অন্যান্য সবকিছুরই পর্যাপ্ত আয়োজন রয়েছে। 

এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম জরুরী সেবা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে। 

উল্লেখ্য, সনাতন ধর্মমতে, চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু ধর্মে লাঙ্গলবন্দের এই  স্রোতে স্নান করে পরশুরাম মুনি তাঁর পাপমুক্ত হয়েছিলেন। ধর্মগ্রন্থ থেকে পরশুরাম মুনির মুক্তির কথা স্মরণ করে ভক্তরা বহু বছর ধরে এই অষ্টমী-পুণ্যস্নান করে আসছেন। লাঙ্গলবন্ধের এ স্নান উৎসবে বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপাল থেকে লাখ লাখ হিন্দু ভক্তের সমাগম ঘটে।



সোনারগাঁও দর্পণ :   

অপারেশন করার চিকিৎসকের সদন নেই। অপারেশন থিয়েটারেও নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। এছাড়া চিকিৎসকও অন্য বিভাগের। তারপরও অপারেশন করেছেন। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে রাসেল নামে এক রোগীর। 

ঘটনাটি গত ৩০ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন দিবাগত রাতে সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ঐতিহ্যবাহী গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড বা সোনারগাঁও সরকারি কলেজ সড়কের ডান পাশে জলিল প্লাজায় অবস্থিত “মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতাল”এ ঘটেছে। 

এ ঘটনার পর হাসপাতাল ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধাঁমাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলেও বিশ^স্ত একটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। খবরপেয়ে, ঘটনাস্থলে গেলে হাসপাতালের ভিতরে কর্মচারীদের দেখা গেলেও একাধিকবার কলিং বেল বাঁজালে এবং ডাকা-ডাকি করলেও কেউ কোন সাড়া দেয়নি। 

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, রাসেল নামে বরিশালের এক ব্যক্তি পরিবার নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করতেন উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের গোহাট্টা গ্রামে। তিনি মেঘনা শিল্পাঞ্চলে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। গত ৩০ মার্চ বিকালে রাসেলের হঠাৎ পেটে ব্যাথা শুরু হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় মেডিকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়। 

এদিকে, হাসপাতালে কোন চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করেন এবং ফোনে শিশির আহমেদ নামে অর্থোপেডিক বিভাগের এক চিকিৎসক (!)’কে ডেকে আনেন। 

ডা. (!) শিশির রাসেলের লিভারে সমস্যা হয়েছে এবং তাকে দ্রæত অপারেশন করাতে হবে, নয়তো রোগির জীবন নিয়ে সমস্যা হবে বলে রোগীর সাথে থাকা ব্যক্তিদের জানান। তারাও দ্বিগবেদ্বিক না ভেবে অপারেশনের অনুমতি দেন।

সন্ধ্যায় অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রাতেই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠায় ডা. (!) শিশির।

পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রোগী বেশ কিছু আগেই মারাগেছেন। 

এ বিষয়ে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শারমিন আক্তার তিথি বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে যতদূর মনে পরে, আমি সোনারগাঁওয়ে যোগদানের পর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বেশ কিছু অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই। তখন মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালের কোন অনুমতিপত্র পাইনি। তখন তাদেরকে অনুমতি না নিয়ে মৌখিকভাবে কার্যক্রম না চালানোর জন্য নির্দেশ দিয়ে আসছিলাম। 

আসলে আমাদের ম্যাজেষ্ট্রেসি পাওয়ার না থাকায় অনেক সময় চাইলেও অনেক কিছু করতে পারিনা। এ সকল বিষয়গুলো সিভিল সার্জন অফিসই দেখে। তবে, ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মশিউর রহমান জানান, মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালের হালনাগাদ সনদ আছে কি-না অফিস না খুললে সঠিক বলা যাচ্ছেনা। তবে, স্বাভাবিকভাবে একজন অর্থোপেডিকের চিকিৎসক কেন লিভার অপারেশন করবে ? আসলে পারলে কিন্তু কোন সমস্যা নাই, না পারলেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। যিনি অপারেশন করেছেন তিনি পারেন না বিধায় সমস্যা হয়েছে। পারলেতো সমস্যা হতো না। 

তবে, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



সোনারগাঁও দর্পণ :

কোন রকম খাবারতো নয়ই বরং ঈদের দিনও এক ফোঁটা পানি চেয়েও পায়নি। টানা তিন দিন খুটির সাথে বেধে নির্যাতন করে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল পাষন্ড স্বামী উজ্জল। তিনি দিন গলায় ফাঁস দিয়েও মারতে চেয়ে ব্যর্থ হয়। 

তিন দিন পর গতকাল মৃত্যু যন্ত্রণার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা গিয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় সাদিয়াকে উদ্ধার করে। পরে তার পালিত মা তাকে হাসপাতাল ভর্তি করে। বর্তমানে সাদিয়া স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। 

যৌতুক না পাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার দমদমা নদভী নগর এলাকার মৃত মাহজাহানের ছেলে উজ্জল এ কান্ড ঘটায়। 

এ বিষয়ে থানায় লিখত অভিযোগে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী জুলেখা জানান, ২০ বছর আগে মেঘনা ব্রীজ এলাকা থেকে কুড়িয়ে পান সাদিয়াকে। বিশ বছর নিজের সন্তানের আদর-স্নেহ দিয়ে লালন-পালন করে গত ২ বছর আগে দমদমা গ্রামের মৃত শাহ জাহানের ছেলে উজ্জলের সাথে বিয়ে দেন সাদিয়াকে। 

বিয়ের পর থেকেই উজ্জল কারণে-অকারণে তার পালিত মেয়ের কাছে যৌতুক বাবদ ৩ লক্ষ টাকা দাবী করে আসছিল। উজ্জলকে বিভিন্ন সময় দুই লাখ টাকাও দেওয়া হয়েছে। তাতেও সে ক্ষান্ত হয়নি। বরং সাদিয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছিল। বর্তমানে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে সাদিয়া চিকিৎসাধীন।

নির্যাতনের শিকার সাদিয়া জানায়, ঈদের তিন দিন আগ থেকে তাকে একফোটা পানিও দেয়নি স্বামী উজ্জল। শুধু মারতো আর হাসতো। তার মা-বোন সবাই জানতো। কিন্তু কিছুই বলতো না। 

এরআগেও তিন বার গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। একবার দমবন্ধ হয়ে দাতে জিহ্বা আটকেও যায়। আল্লাহর কৃপায় বেঁচে যান। এমনকি তার চুলও কেটে দিয়েছে স্বামী উজ্জল।

সবশেষ গত ২ এপ্রিল উজ্জলের মা মনোয়ারার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে পুনরায় নির্যাতন শুরু করলে তার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যান এবং খুটির সাথে বাধাবস্তায় তাকে উদ্ধার করে।

এঘটনায় উজ্জলের শাস্তি দাবি করেছেন নির্যাতনের শিকার সাদিয়া, তার মা জুলেখা এবং এলাকাবাসী। 

এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান জানান, এ ঘটনায় মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। মেয়েটি যেহেতু এতিম। সোনারগাঁও থানা পুলিশ সর্বোচ্চ মানবিকতার সাথেই মামলাটি দেখবে।

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget