Halloween Costume ideas 2015

মোগরাপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছাচারীতা ও দুর্ণীতির অভিযোগ

 


সোনারগাঁও দর্পণ :

“অন্নপূর্ণা যার ঘরে, সে কাঁদে অন্নের তরে” অথবা “আগের বৌ তাড়াইলাম চাল চাবানের ডরে, পরেরটা দেহি এহন আস্তা চালই গিলে”। 

বাংলার বহুল প্রচলিত এই প্রবচন দুটি যেন নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁওয়ের “মোগরাপাড়া এইচ,জি,জি, এস (হরি, গৌর, গোবিন্দ, শ্যাম-সুন্দর) স্মৃতি বিদ্যায়তন”র বেলায় অনেকটাই কার্যকর।  

এক সময় স্থানীয়দের ধারণা ছিল স্কুলটি সরকারি করণ করা হলে স্থানীয় গরীব-দুস্থ্যরা কম খরচে তাদের সন্তানদের শিক্ষা দিতে পারবেন। অনেক সংগ্রাম চেষ্টার মাধ্যমে অবশেষে বিদ্যালয়টি সরকারিও হলো। কিন্তু সরকারি হওয়ার পর থেকে স্থানীয়রা কম খরচে সরকারিভাবে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করানো দুরের কথা, স্থানীয় সন্তানরা বিদ্যালয়টিতে ভর্তিরই সুযোগ না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।

তার উপর যারা ভর্তি হয়, তাদের সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়। এছাড়া স্কুলের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম আর দুর্নীতি যেন ছাঁয়া সঙ্গি।

সম্প্রতি আসন্ন এসএসসি ও ভোকেশনাল পরীক্ষার রুটিন প্রকাশের পর প্রকাশ্যে আসে স্কুলের কতিপয় দুর্নীতিবাজ শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ। দীর্ঘ দিন আগে থেকে এ অভিযোগের সাথে ভর্তি বাণিজ্যেরও একটি অভিযোগ ছিল। যা ভয়ে কেউ কখনোই প্রকাশ্যে আনেনি। তবে, বর্তমানে বিনা রশিদে কোচিংয়ের কথা বলে তিন হাজার দুইশত টাকা থেকে পাঁচ হাজারের অধিক অর্থ গ্রহণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, মোগরাপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কোচিং এর নামে ৩২শ থেকে ৫ হাজারের অধিক টাকা নিচ্ছে স্কুলটির সহকারি শিক্ষক হিমাংশু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুলতান মিয়া, সহকারি শিক্ষক নুর আলমসহ বেশ কয়েকজন খন্ডকালীণ শিক্ষক। 

যদি বেশ কিছু দিন আগে খন্ডকালীণ শিক্ষকদের খরচ বাবদ স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু টাকা সংগ্রহের কথা “ সোনারগাঁও দর্পণ”এর কাছে স্বীকার করেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের একজন শিক্ষক। তার দাবি, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা খুবই কম। ফলে, খন্ডকালীণ হিসেবে বেশ কয়েকজন শিক্ষক নেন। তারা যেহেতু সরকার থেকে কোন বেতন পান না তাদের খরচ লাঘবের জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর এ খড়গ দেওয়া হয়। 

অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোগরাপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মোট ৩৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিবে। তাদের কাছ থেকে মডেল টেস্ট ও কোচিং বাদব ৩২শ টাকা এবং মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশ না নিলে জড়িমানা বাবদ দুই হাজার টাকাসহ মোট পাঁচ হাজার টাকা দাবি করছে। যারা টাকা না দিচ্ছে সে সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেওয়া হবেনা বলে হুমকী দিচ্ছে। মোট পরীক্ষার্থী ৩৬০ জন হিসেবে ৩ হাজার ২শ টাকা করে মোট টাকার ১১ লাখ ৫২ হাজারের বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার টার্গেটে নামে স্কুলটির প্রধান শিক্ষকসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র।

এ ব্যাপারে অন্যতম অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক হিমাংশু এক প্রশ্নের জবাবে জানান, কোচিং করার সরকারি নিয়ম না থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে একটি মিটিংয়ে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হলে অভিভাবকদের সম্মতিতে কোচিং করা যাবে বলে জানান। পরে ৮০ ভাগ অভিভাবকের স্বাক্ষরে অনুমতির পর কোচিং করানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমি বেশি দিন হয়নি এখানে যোগদান করেছি। তবে যতদুর জানতে পেরেছি, একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে অভিভাবকদের সম্মতিতেই কোচিং এবং মডেল টেস্ট এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর টাকার জন্য কোন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেওয়া হচ্ছেনা এই অভিযোগটি সত্য নয়।

পদাধিকার বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


Post a Comment

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget