সোনারগাঁও দর্পণ :
আলৌকিক কারিশমায় বিচার শালিসে বসে ধর্ষণের ঘটনা হয়ে গেল সাধারণ মারামারি। তাও সেই বিচারে অভিযুক্তের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে নগদ এক লাখ বিশ হাজার টাকা। আর এই কারিশমার মুল হোতা সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউপির কথিত (সুবিধাবাদী ) বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, গত ২০ জুন উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া এলাকায় অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে স্থানীয় এলাকার তিন লম্পট মৃত আলমাছের ছেলে ফয়েজ ভূইয়া (৩৮) এবং একই এলাকার সহোদর লাল চাঁদ (৪২) ও আব্দুল্লাহ (৪১) অভিযোগকারীর মেয়েকে স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে পথরোধ করে জোর করে স্থানীয় অপর বিএনপি নেতা গোলজারের বাড়ির পাশে থাকা একটি বাউন্ডারী বাড়ির ভিতর নিয়ে একাধিকবার পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে তার নির্যাতিতা মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনাটি কাউকে না জানাতে বলে এবং বললে ভুক্তভোগীর গলা কেটে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
ধর্ষিতা ওই ছাত্রী পরে বাড়ি গিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে মলিন দৃষ্টিতে দৈনন্দিন কাজ করে। এ দিকে মেয়ের মলিন চেহারার বিষয়টি নির্যাতিতার মায়ের দৃষ্টিগোচর হলে মেয়ের কাছে কারণ জানতে চায়। এক পর্যায় মায়ের চাঁপাচাঁপিতে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা জানায়।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা না করার জন্য স্থানীয় কথিত বিএনপি নেতা মিন্টু, মোস্তফা, আঃ সাত্তার, আলী আক্কাস ও অন্যান্য মাতব্বর মিলে ভুক্তভোগী পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখায়।
অপরদিকে গত সোমবার (৭জুলাই) নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীর মা ঘটনার সাথে জড়িত তিন লম্পটকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ করলে বুধবার (৯ জুলাই) সকালে কথিত বিএনপি নেতারা জোরপূর্বক সামাজিকভাবে শালিস বসিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিষয়টি মিমাংসা করে।
শালিসের অন্যতম বিচারক ও স্থানীয় কথিত বিএনপি নেতা আঃ সাত্তারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি কথাকাটা নিয়ে ঝগড়ার বিচার শালিস করার কথা স্বীকার করেছেন।
কথাকাটা ও ঝগড়া কি নিয়ে হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছে সেইটা আমার জানা বিষয় না। ঝগড়ার কারণ না জেনে কিভাবে বিচার করলেন, এমন প্রশ্নের তিনি কিছুক্ষন নিরব থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম খান জানান, ঘটনাটি গত মাসের। থানায় জানিয়েছে দুই দিন আগে। আজ ঘটনাস্থলে সার্কেল এস পি এবং ওসি সাহেব গিয়েছেন। বর্তমানে আইনানুগ কার্যক্রম চলমান।
Post a Comment