সোনারগাঁও দর্পণ :
নির্বাচন আসন্ন। ঘুম নেই নির্বাচনে অংশ নিবেন এমন প্রত্যাশীদের চোখে। দিন-রাত একাকার করে ফেলেন দুস্থ্যদের সাহায্যার্থে। লোক দেখানো মায়াকান্নার সাথে ছবি তুলেন আর বিশেষ চাটুকাররা নানান বিশেষণে ভরিয়ে তোলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
আবার নির্বাচনে বিশেষ পদপ্রার্থী। নির্বাচন কমিশন যেকোন সময় ঘোষণা করতে পারেন নির্বাচনের তারিখ। নির্বাচনে বিশেষ পদ প্রত্যাশী হয়ে ছালাম-কালামের অভাব নেই। অখ্যাত-কুখ্যাত আর বিখ্যাত মিডিয়া ভাড়ায় এনে তা বিভিন্নভাবে প্রচার ও প্রকাশ করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় উমক-তুমক ভাই মানবিক ভাই। দুস্থদের দান করলেন এত টাকা। তুলে দিলেন খাদ্যসামগ্রী। নির্বাচন শেষ। দেখা নেই কোন নেতার। নির্বাচন হচ্ছেনা। দেখা নেই উমক-তুমক ভাইয়ের। যেন ভাটা পরেছে তাদের মানবিকতায়। যে ভাটায় এখনো জোয়ার লাগেনি।
দেশে শীতের আমেজ বিরাজ করছে প্রায় মাসখানেক হবে। তবে, শীত বলতে যা বুঝায় তা খুব বেশি দিনের নয়। ১২ থেকে ১৫ দিন। তবে গত দুই-তিন দিন ধরে অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের নাস্তানাবুদ অবস্থা। যার ছোঁয়া লেগেছে সোনারগাঁওয়েও। এ অঞ্চলের সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এ শীতে। সারাদিন সাধারণ মানুষ তেমন একটা বের হয়না বাহিরে। তবে, যাদের বের না হয়ে উপায় নেই তাদেরতো আর ঘরে বসে থাকার ‘জো’ নেই।
গতকাল রাত আনুমানিক ৯টা। মোগরাপাড়া বাজারে কথা হয় এক অটোচালকের ( সঙ্গত কারণে নাম প্রকাশ করা হলনা ) সাথে। মধ্য বয়সি মানুষ। বেশ পুরোনা একটা গরম পোশাক গায়ে। নিচে সেন্টু গেঞ্জি। অটোর সামনে কোন গøাস নেই। একটি দোকানের সামনে যাত্রী নামিয়ে রীতিমতো ঠান্ডায় কাঁপছেন তিনি। জানতে চাইলাম শীতের পোশাকের কথা। জানালেন - যে আয়, ভাতের টাকা জোগাড়ই দায়। গাঁয়ে থাকা গরম পোশাকটি গতবার সাহায্য পেয়েছিলেন একজনের কাছ থেকে। এবার কোন গরম পোশাক পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তার সাফ উত্তর। এখনতো পাইব বৈদ্যের বাজারের মানুষ। তাগ (ওদের) হেন (ঐখানে) অহন (এখন) নির্বাচন। আমাগো (আমাদের) নির্বাচন আইলে (হলে) আমরা আবার পামু (পাব)। নেতারাতো যাই (যেটা) দেয়, হেইডা (সেইটা) আবার লাভ ছাড়া দেয়না। তাগ (তাদের) ব্যবসার সময় হোক, দিবনে। যুদি (যদি) ভাগ্যে থাকে পামু (পাব), নাইলে (নইলে) এইডা (এটা) দিয়াই (দিয়েই) কোনমতে (কোনরকম/মোটামোটি) পার কইরা (করে) দিমু (দিব)। কি আর করমু (করবো)।
Post a Comment