সোনারগাঁও দর্পণ :
একচ্ছত্র মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী বাহিনীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত সন্ত্রাসী
আকাশ মারা গেছে। গত ২৭ জুলাই রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
এর আগে, সাকিব গ্রুপের প্রধান সাকিব ও তার সহযোগিরা গত ২৩ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মৌগরাপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর এলাকা সংলগ্ন পৌরসভার আজাম বাড়ি (চিরার মিল) এলাকায় আকাশদের ঘরে প্রবেশ করে ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে আকাশকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করে সাকিব বাহিনী।।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত আকাশ আজাম বাড়ি এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে এবং মোগরাপাড়া এলাকা ও এর আশপাশের এলাকা এবং ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিন্হিত পরিবহন ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ী পিয়েল গ্রুপের অন্যতম সদস্য।
সূত্র আরও জানায়, সন্ত্রাসী পিয়েল ও অপর সন্ত্রাসী সাকিব আত্মীয়তার সম্পর্কে আপন মামাতো-ফুপাতো ভাই। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা কালীণ সাকিব সোনারগাঁওয়ের শাহজাহান হত্যা মামলার প্রধান আসামী, মাদক সম্রাট ও র্যাবের হাতে ক্রস ফায়ারে নিহত উপজেলার এক সময়ের মাদক সম্রাট ও সন্ত্রাসী গিট্টু হ্রদয়ের বোনের স্বামী পিরোজপুর ইউনিয়নের ছোট কোরবানপুর গ্রামের রাসেল বাহিনীর হয়ে কাজ করতো। সে সময় সাকিব ও পিয়েল গ্রুপের অত্যাচারে স্থানীয়রা এতোটাই অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল যে, তাদের নাম ক্রস ফায়ারের তালিকায় ওঠে। পরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক কারণে ক্রস ফায়ার শিথিল হলেও সাকিবের পরিবার তাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে, জুলাই-আগষ্টের ঘটনায় শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর সম্প্রতি সাকিব দেশে আসে এবং রাসেল গ্রুপের সাথে আগের মতো মাদকসহ বিভিন্ন খারাপ কাজ শুরু করে।
এদিকে, সাকিব দেশের বাইরে থাকায় মোগরাপাড়া ইউনিয়নের সিংহভাগ মাদকের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে পিয়েল গ্রুপের কাছে। ফলে
পিয়েল বাহিনীর কারণে সাকিব ও রাসেল গ্রুপ তেমন সুবিধা করতে পারাযছিলনা। তাই গত ১২ জুলাই পিয়েল গ্রুপের সদস্য লিজনের পা কেটে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে রাসেল।
আর গত ২৩ জুলাই পৌরসভার আজাম বাড়ি (চিরার মিল) এলাকায় পিয়েল গ্রুপের অন্যতম সদস্য আকাশদের ঘরে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আকাশকে এলোপাথারী কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত আহত করে সাকিব ও তার সহযোগিরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার পরিবারের লোকজন আকাশকে হাসপাতালে নিলে চার দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে গত ২৩ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকাশ মারা যায়।
এর গত মাসখানেক আগে, সাকিব মনসুর নামে হাবিবপুর এলাকার এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে।
এদিকে, আকাশে মারা যাওয়ার খবরে সাকিব ও তার বাহিনীর সদস্যরা আকাশের বাড়ি যায় এবং এ বিষয়ে কোন মামলা করলে চৌরাস্তা এলাকায় ব্যবসা করা আকাশের অপর দুই ভাইকেও মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় সাকিব।
অপরদিকে, দুই সপ্তাহের মধ্যে পরপর দুইটি ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ না হওয়ায় এবং পুলিশ ফৌজধারী কার্যবিধির ১৫৪ ধারা প্রয়োগ না করায় সোনারগাঁও থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান খাঁন সম্প্রীতি বলেছেন, গত ১২ জুলাইয়ে লিজনের পা বিচ্ছিন্নে ঘটনাটি লোক মুখে শুনেছেন এবং ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করার জন্য থানায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভুক্তভোগীরা না আসায় তারা এ ব্যাপারে কিছু করতে পারেননি। তবে, ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করতে থানায় গেলে মামলা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
Post a Comment