সোনারগাঁও দর্পণ :
প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে। পরে মৃত বোনের স্বামীর সাথে কথা বলার মতো তুচ্ছ কারণে কথিত স্ত্রীকে ১০ করে হত্যা করে স্বামী। ঘটনার ১০ মাস পর চাঞ্চল্যকর মামলার মূল হোতা রাসেল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) ফ্রিজও জব্দ করেছে পুলিশ।
এরআগে, গতবছরের ৫ এপ্রিল মাসদাইর বাড়ৈভোগে ফারিয়া গার্মেন্টের সামনের একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক নারীর খন্ডিত মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করে হয়। পিবিআই এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায়। শুরু হয় রহস্য উদঘাটনের কাজ।
অনুসন্ধানে পিবিআই জানতে পারে ঘটনার আদ্যপান্ত। পিবিআই জানায়, রংপুর জেলার আব্দুল জলিলের মেয়ে তানজিনা। রংপুরের মিঠাপুকুর থানার এনায়েতপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে রাসেলের সাথে মনবিনিময় পরবর্তী দু’জনে বিয়ে করে ফতুল্লার মাসদাইর বাড়ৈভোগ এলাকার সিরাজখানের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
পিবিআই জানান, রাসেল ২০০৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করে। ২০১০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় একই বিভাগ থেকে ৩.৭০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীতে জীবিকার তাগিদে ঢাকার সাভার ও নারায়ণগঞ্জে বসবাস শুরু করে। এরমধ্যে পার্শ্ববর্তী এলাকার তানজিনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু আসামী দেখতে তেমন ভালো না হওয়ায় মেয়ের পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে মোনালিসা নামের একটি মেয়ের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আসামী রাসেলের। বিয়ের সংবাদ শুনে তানজিনা বাড়ি থেকে বের হয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে আসে এবং গার্মেন্টেস এ চাকুরী নেয়। এসময় আসামী রাসেরেল সাথে তানজিনার আবারো প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একসাথে বসবাস করা শুরু করেন। রাসেলের অভিযোগ, রাসেলের সাথে থেকেও তানজিনা তার মৃত বোনের স্বামী মোস্তফাসহ বিভিন্ন জনের সাথে ফোনে কথা বলতেন। এ কারণেই রাগান্বিত হয়ে ২৯ মার্চ রাতে বাড়ী ফিরে তানজিনাকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করা ধারালো বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে ।
নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাকিল হোসেন বলেন, রাসেল তার বাড়িওয়ালা সিরাজ খানকে জানান, তার স্ত্রী তানজিনা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। এরপর তিনি বাসা ছেড়ে চলে যান। পুলিশের সন্দেহ হলে রংপুর থেকে রাসেলকে গ্রেফতারের পর পিবিআই জানায়, মাথাটি যে ডোবায় পাওয়া গেছে সেখানেই দেহ কয়েক টুকরা করে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন সেই ডোবায় সেচ মেশিন দিয়ে পানি সরানোর চেষ্টা চলছে। পানি সরানোর পর শরীরের বাকি অংশের খোঁজ করা হবে। ‘আসামির দেওয়া তথ্যে, আমরা এরই মধ্যে ভিকটিমকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি দা জব্দ করেছি। এছাড়া ভিকটিমকে হত্যার পর মরদেহ কয়েক টুকরা করে যে ফ্রিজে রেখে দেওয়া ছিল সেই ফ্রিজটিও জব্দ করা হয়েছে।
Post a Comment