মনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গিয়ে উচ্চবিলাসী জীবন-যাপন করার মনোভাবের কারণেই হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা আল্লামা মামুনুণ হক বিভিন্ন ধরণের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেছেন, বিভিন্ন দেশী ও আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের সাথে তার সংশ্লিষ্ঠতা থাকার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। এসব কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে টাকা আসতো। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা বিভাগের মহাসচিব মামুনুল হকের রিমান্ড ১৮ দিনের রিমান্ড ইস্যুতে রোববার (৬ জুন) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
এসপি আরও জানান, মামুনুলের কর্মকান্ডের বিষয়ে যে সকল তথ্যগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি জানান, এসব সছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে সে পর্যাপ্ত অর্থ উপার্জন বা আত্মসাত করেছেন বলেও পুলিশের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে। রিমান্ডে মামুনুল অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিন তদন্তকারী সংস্থাকে নিয়ে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্তের এ সকল বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা যাবে।
পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম আরও বলেন, ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে ঝর্ণা নামের এক নারীসহ স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়ার ঘটনায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে ব্যাপক তান্ডব চালানো হয়। পরবর্তিতে ওই নারী সোনারগাঁও থানায় গিয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। ধর্ষণ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদে বিয়ের কোন বৈধ কাগজপত্র বা তথ্য প্রমাণ দিতে পারেননি। এছাড়া, শরিয়ত সম্মতভাবে বা দেশের প্রচলিত আইনী কাঠামো অনুসারে যে বিয়ের কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়েও কোন তথ্য প্রমাণ দিতে পারেননি মামুনুল হক।
পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, ২৮ মার্চ দেশবাপী কথিত হরতালের নামে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত নাশকতার ঘটনা ঘটে এবং এরআগে ২৫ মার্চ মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জে আসেন। এখানে তার উসকানীমূলক বক্তব্য নাশকতায় তার ভক্ত ও উগ্রবাদীদের সাহস যুগিয়েছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক স্বীকারও করেছেন। পরে সহিংসতার ৩ দিন পর ৩১ মার্চও তিনি নারায়ণগঞ্জে এসে ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঘটনায় দায়েরকরা ৬টি মামলায় ৩ দিন করে মোট ১৮ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। প্রথমে ৩টি মামলায় জেলা পুলিশ, পরবর্তিতে দুটি সিআইডি ও একটি মামলায় পিবিআই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআই’র পুলিশ সুপার মনিরুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ('এ' সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকীসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Post a Comment