সোনারগাঁও দর্পণ :

সোনারগাঁওয়ের মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দারোগোল্লা গ্রামে  (শেখ সাহেব বাড়ি নামে বেশি পরিচিত) নিজ ঘরে স্বামী সাব্বির (২৩) ও স্ত্রী সিনথিয়া (২০)’র ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। 

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে বিবেচনায় রাখলেও সিনথিয়ার পরিবার ও স্থানীয়রা বিষয়টিকে হত্যাকাÐ বলে দেখছে। স্থানীয়দের দাবি, পিতা-পুত্রের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সৎ মায়ের হস্তক্ষেপ তুচ্ছ ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ডে পরিণত করেছে। 

অপরদিকে নিহত সিনথিয়ার মা শাহেরা বানু জানান, স্বামী-স্ত্রীর সাথে পারিবারিক দ্বন্দ্বে জেরে কিছু দিন আগে স্থানীয় পঞ্চায়েতে সমস্যার সমাধান হয়। তবে, ঘটনাটিকে হত্যা বলেই তিনি মনে করেন এবং সুষ্ঠু তদন্ত করলে তার ধারণাই ঠিক হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার  মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দারোগোল্লা গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে সাব্বিরের সাথে বন্দর উপজেলার গোকুল দাশের বাগ (গোলদেশের বাগ) আনন্দ নগর এলাকার নবীর হোসেনের মেয়ে সিনথিয়ার ২০২১ সালে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই মাঝে তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই বছর বয়সী সাফরান হাসান নুর নামে এক ছেলে জন্ম নেয়। 

তারা আরও জানান, সাব্বিরের মা গত হলে তার মামার বাড়ির সম্পত্তি থেকে টাকা এনে স্থানীয় এলাকায় কিছু জমি নিজ নামে ক্রয় করেন সাব্বির। পরে ৫/৬ বছর আগে তার বাবা নুর মোহাম্মদ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এদিকে, সাব্বির উন্নত জীবন-যাপনের উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছা করলে তার বাবাও রাজি হয়। কিন্তু, সৎ মা নুর মোহাম্মদকে তার ছেলে সাব্বিরকে বিদেশ পাঠাতে হলে সাব্বিরের মামার বাড়ি থেকে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করে যে জমি ক্রয় করেছে সে জমি তার বাবার নামে লিখে দিলেই কেবল বিদেশের টাকা নুর মোহাম্মদকে দেওয়ার শর্ত দেয়। এ নিয়ে সৎ মা, ছেলে আর বাবার সাথে দ্বন্দ্ব কিছুদিন ধরে চরম পর্যায় পৌঁছে বলে দাবি করেন তারা। আর এ ঘটনা নিয়েই স্বামী-স্ত্রী’কে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখতে পারে বলে স্থানীয় সূত্র দাবি করে। 

শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রাত ৩টার দিকে পুলিশ নিহতদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। 

নিহত সাব্বিরের বড় বোন নুপুর আক্তার বলেন, গত ২০ দিন আগে গ্রামের পঞ্চায়েত বসে তাদের দুজনের দ্বন্ধ নিরসন করেন। এরপর তাদের মধ্যে কোন সমস্যা ছিল না। শুক্রবার রাতেও তার ( ভাই সাব্বির) বাসায় গিয়েছিলেন। খাবার খেয়ে চলে আসেন। পরে মৃত্যুর খবর পেয়ে তাদের বাসায় আসেন। 

সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: রাশেদুল হাসান খান জানান, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।